ট্রান্সফরমার কি | ট্রান্সফরমার কিভাবে কাজ করে | what transformer bangla | Electrical Bangla Book

 ট্রান্সফরমার কি | ট্রান্সফরমার কিভাবে কাজ করে | what transformer bangla | Electrical Bangla Book

ট্রান্সফরমার কি

 সহজ কথায় বলা যায়, এমন একটি ইলেক্ট্রনিক/ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্র যেটি ইনপুট হিসেবে ইলেক্ট্রিক পাওয়ার নিয়ে আউটপুটেও ইলেকট্রিক পাওয়ার দিবে, কিন্তু এদের মধ্যে কোন তারের সংযোগ থাকবে না।কিন্তু, তাত্ত্বিক ভাবে বলতে গেলে বলতে হবে, ” ট্রান্সফরমার এমন একটি স্থির যন্ত্র বিশেষ যেখানে কারেন্টের সাপেক্ষে, এসি সাপ্লাই এর ভোল্টেজ বাড়ানো হয় নয়ত কমানো হয়” ।

ট্রান্সফরমার কেন ব্যবহার করা হয়

ধরুন পাওয়ার স্টেশন থেকে আপনার বাসা অনেক দূরে। তখন আপনি যদি আপনার প্রয়োজনীয় ভোল্টেজ পেতে চান তাহলে সেখানে একটি স্টেপআপ ট্রান্সফরমার দিয়ে বাড়িয়ে তা দূরবর্তী স্থানে যেখানে আপনার বাসা অবস্থিত, সেখানে সঞ্চালিত করা হয়। আবার, আপনার বাসায় এসি লাইন দিয়ে সরাসরি শখের প্রজেক্ট কিংবা সার্কিট কিংবা জরুরী ব্যবহার্য্য টিভি, ডিভিডি, টর্চ, চার্জ লাইট ইত্যাদি কে কখনই চালাতে পারবেন না। প্রথমে আপনাকে অবশ্যই মেইন লাইনের ভোল্টেজ কে কমিয়ে উক্ত সার্কিট বা যন্ত্রের উপযুক্ত করতে হবে। আর এই কাজটিই করে থাকে ট্রান্সফরমার।


ট্রান্সফরমার মূলত কি কি জিনিস নিয়ে তৈরি হয়

ট্রান্সফরমার মূলত নিম্নোক্ত জিনিস গুলো দ্বারা তৈরি হয়।

১। প্রাইমারী কয়েল
২। সেকেন্ডারী কয়েল ও
৩। ম্যাগনেটিক কোর
এছাড়াও প্রকারভেদ ও প্রয়োজন অনুসারে আরো বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ব্যবহার হয়ে থাকে।


ট্রান্সফরমার কিভাবে কাজ করে

এটাকে বলা হয় মিউচুয়াল ইন্ডাকশন । অর্থাৎ প্রাইমারী কয়েলে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করলে এর চার পাশে একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশের সৃষ্টি হয়। আর এই ফিল্ড থেকে ফ্লাক্স সংগ্রহ করে সেকেন্ডারী কয়েল। তখন তাদের মধ্যে একটি মিউচুয়াল/কমন ইন্ডাকশন এর তৈরি হয়। যার ফলে সেকেন্ডারীতে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। এই প্রবাহিত তড়িৎ এর মান নির্ভর করে সেকেন্ডারী ও প্রাইমারী তে ব্যবহৃত প্যাঁচ সংখ্যার উপরে। যাকে বলে ট্রান্সফরমারমেশন রেশিও ।

ট্রান্সফরমার এর ক্ষমতার একক কি এবং কেন

ট্রান্সফরমারের ক্ষমতার একক

কেভিএ ( KVA )। অর্থাৎ কিলোওয়াট ভোল্ট এম্পিয়ার। কারণ টা হল, আমরা জানি যেকোন মেশিনের ক্ষমতার একক নির্ধারণ করা হয় তার # লস এর উপর ভিত্তি করে। এখানেও ঠিক একই বিষয়। ট্রান্সফরমারের লস গুলো হল
১। আয়রন লস/কোর লস
২। কপার লস
আচ্ছা, তো এখন আয়রন লস মানেই ভোল্টেজ এর ব্যাপার, আর কপার লস মানেই কারেন্ট এর লস। তাহলে মোটের উপর দাঁড়াল ভোল্ট এম্পিয়ার। এ জন্যেই ট্রান্সফরমার এর ক্ষমতার একক হিসেবে কিলোওয়াট ভোল্ট এম্পিয়ার বা কেভিএ লেখা হয়ে থাকে।


স্টেপ আপ  ট্রান্সফরমার কাকে বলে

যে ট্রান্সফরমারের প্রাইমারীতে ভোল্টেজ দিলে সেকেন্ডারীতে উচ্চ ভোল্টেজ পাওয়া যায় তাকে স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার বলে। আমরা ইউপিএস, আইপিএস , ইনভার্টার প্রভৃতি যন্ত্রপাতিতে যে ট্রান্সফরমার ব্যবহার করে থাকি সেগুলো স্টেপআপ প্রকৃতির ট্রান্সফরমার।

স্টেপ ডাউন  ট্রান্সফরমার কাকে বলে

যে ট্রান্সফরমার এর প্রাইমারীতে ভোল্টেজ দিলে সেকেন্ডারীতে অপেক্ষাকৃত নিম্ন ভোল্টেজ পাওয়া যায় তাকে স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার বলে। বেশীরভাগ ঘরের যন্ত্রপাতি যা আমরা ব্যবহার করি সেগুলোর ভেতরে স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমারই ব্যবহার করা হয়।

স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার কে স্টেপ ডাউন করবো

যদি আমরা কোন ট্রান্সফরমার কে স্টেপআপ করতে চাই তাহলে ট্রান্সফরমারের প্রাইমারী কয়েলের প্যাঁচ সংখ্যার তুলণায় সেকেন্ডারী কয়েলের প্যাঁচ বেশি করতে হবে। আর এই প্যাঁচ সংখ্যা নির্ণয় করতে হলে আমাদের কে ট্রান্সফরমারের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল জানতে হবে এবং সূত্রানুযায়ী ট্রান্সফরমারের প্রাইমারী ও সেকেন্ডারী কে প্রয়োজন মত প্যাঁচ দিয়ে নিতে হবে।

ট্রান্সফরমার রেশিও বলতে কি বুঝায়


ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি কয়েলের ভোল্টেজ, প্যাঁচ সংখ্যা ও কারেন্টের মধ্যে যে সম্পর্ক থাকে, তাকে ট্রান্সফরমারের ট্রান্সফরমেশন রেশিও বলে। একে নিম্নোক্ত ভাবে প্রকাশ করা যায়-

এখানে,
Vp = প্রাইমারী ভোল্টেজ
Vs = সেকেন্ডারী ভোল্টেজ
Np = প্রাইমারী প্যাঁচ সংখ্যা
Ns = সেকেন্ডারী প্যাঁচ সংখ্যা
Ip = প্রাইমারী কারেন্ট
Is = সেকেন্ডারী কারেন্ট